জাতীয় মৌ মেলা ২০১৯

জাতীয় মৌ মেলা ২০১৯

জাতীয় মৌ মেলা ২০১৯

মাশরুম উন্নয়ন কর্মকর্তা


হর্টিকালচার উইং, ডিএই, খামারবাড়ি, ঢকা-১২১৫

রাজধানীর ফার্মগেটে আ. কা. মু গিয়াস উদ্দীন মিলকী অডিটরিয়াম চত্বরে তিন দিন ব্যাপী জাতীয় মৌ মেলা ২০১৯ এর উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। জাতীয় মৌ মেলা উপলক্ষ্যে মিল্কী অডিটরিয়ামে ‘মৌচাষ ও মধুর বাজার সম্প্রসারণ, সমস্যা ও উত্তরণ’ বিষয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এ সময়  মাননীয় কৃষিমন্ত্রী বলেন, সরকারের উন্নয়নের যে ধারাবাহিকতা সৃষ্টি হয়েছে, তা অব্যাহত রাখতে হবে। কৃষিসহ ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধশালী করতে হবে। কৃষিকে প্রকৃত বাণিজ্যিক কৃষিতে রুপান্তর করতে হবে, এর জন্য বাজারজাতকরণ ও রপ্তানি অপরিহার্য। তিনি আরও বলেন, জাপানে আমাদের মধু রপ্তানি হচ্ছে। জাপানসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আমাদের পণ্যের বহুমুখীকরণের মাধ্যমে রফতানি বৃদ্ধি করতে হবে। খাবার মানসম্পন্ন, নিরাপদ ও সুস্বাদু হলে আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের রফতানি বাড়বে।


মাননীয় কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমাদের জমি অনেক ভালো। আমরা সারা বছর ধরে উৎপাদন করতে পারি। আমাদের দেশের মানুষের আয় কম। একটু বেশি উৎপাদন হলে আর তারা দাম পায় না। এসকল ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি নিতে হবে। প্রতিবছর প্রচুর মধু বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। মধুর বাণিজ্যিকীকরণের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি ও রফতানি প্রক্রিয়াকে সম্প্রসারণ করতে বিভিন্ন ক্ষেত্র খুঁজে বের করতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে আহ্বান জানান ।


সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মোঃ নাসিরুজ্জামান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মীর নূরুল আলম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হর্টিকালচার উইংয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক শাহ মো: আকরামুল হক। মৌচাষ ও মধুর বাজার সম্প্রসারণ, সমস্যা ও উত্তরণ’ বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ব বিভাগের প্রফেসর মোঃ আহসানুল হক স্বপন। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচক ছিলেন বিসিকের মৌ চাষ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক জনাব খোন্দকার আমিনুজ্জামান ও বাংলাদেশ এগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) এর এ এফ এম ফখরুল ইসলাম মুন্সী।  


উল্লেখ্য, মধু এখন রফতানি পণ্য তালিকায় নাম লিখিয়েছে। ফসলের মাঠে মৌমাছি বিচরণ করলে পরাগায়ণের কারণে ফসলের উৎপাদন ১৫-২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে। মৌচাষের মাধ্যমে মধু আহরণে সমৃদ্ধি ও শস্য বা মধুভিত্তিক কৃষিজ উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। মৌসুমে সরিষা, ধনিয়া, তিল, কালিজিরা, লিচুসহ আবাদ হয় মোট প্রায় ৭ লাখ হেক্টর জমিতে বা বাগানে। মাত্র ১০ শতাংশ জায়গায় মৌ বাক্স বসিয়ে মধু আহরণ করে। প্রায় ২৫ হাজার মৌ-চাষিসহ মধু শিল্পে জড়িত প্রায় ২ লাখ মানুষ। উৎপাদন প্রায় ৬ হাজার টন। ফসলের এই পুরো সেক্টরটিকে মধু আহরণের আওতায় আনতে পারলে ফসলের উৎপাদন দ্বিগুণেরও বেশি হবে। দেশে এখন প্রায় সাড়ে ছয় লাখ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়। পুরো সরিষার মাঠ মধু সংগ্রহের আওতায় আনা গেলে উৎপাদন যেমন বাড়বে, তেমনি ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতাও কমবে।