বানিজ্যিক আম বাগান স্থাপন ও আমের হপারপোকা দমনে সফল কৃষক
    
ঋন গ্রহীতার নামঃ মোঃ মোশারফ হোসেন মোল্লা
পিতাঃ মৃঃ ছুবান্দী মোল্লা
এফএসজিঃ সাবেক লাউখোলা কৃষক সমবায় সমিতি লিমিটেড।
উপজেলাঃ জাজিরা,জেলাঃ শরীয়তপুর।
উদ্যোগঃ বানিজ্যিক আম  উৎপাদন ও আমের হপার পোকা দমন
মোবাইল নং-০১৭১৭৯১৫৭৮১

      মোঃ মোশারফ হোসেন মোল্লা (বয়স ৩৫) এসএসসি শ্রেনী পর্যন্ত পড়াশুনা করেছেন এবং তার পরিবারে ৫ জন সদস্য আছে। তার প্রধান পেশা কৃষি। তিনি ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এসএফজিতে যোগ দেন। বানিজ্যিক আম উৎপাদনের জন্য তিনি এসসিডিপি (ব্র্যাক) থেকে ১৫,০০০ টাকা ঋন নিয়েছেন,যেখোনে তাঁর নিজস্ব উৎস হতে বিনিয়োগ ছিলো ২৫,০০০ টাকা । তিনি আম  চাষের জন্য ১০০ শতক জমি লিজ নিয়েছেন। পাশাপাশি ৬৬  শতক জমিতে উচ্চ মূল্যের ফসল যেমন- করলা, লাউ করেন।
 
২০১২ সালে  মোঃ মোশারফ হোসেন  ৩৫০ টি আ¤্রপালি  আমের চারা রোপন করেন। ৩৫০ টি আ¤্রপালি চারার মূল্য ২৮০০০ টাকায়  ক্রয় করেন। তিনি ২০১৪ সালে প্রথম ফল সংগ্রহ শুরু করেন। মৌসুমের সময়  গড়ে  ৮৫০কেজি ১৬৭০ কিজি ফল সংগ্রহ করে  আয় করেন প্রায় ২০০০০০ টাকা ( দুই লক্ষ টাকা) ১২০ টাকা প্রতি কেজির মূল্য । সর্বোপরি, এক বছরে আম থেকে তার নিট আয় ১৫০০০০ টাকা অর্থাৎ আ¤্রপালি জাতের আম চাষ করে তিনি প্রতি মাসে নীট লাভ করেন ১২৫০০ টাকা। পরবর্তীতে এসসিডিপি প্রকল্পের মাধ্যমে উপজেলা কৃষি অফিসার মহোদয় আমের হপার পোকা দমনের উপর একদিনের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করেন এবং হপার প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেন। হপার পোকা দমন সর্ম্পকে বুঝতে পারার সাথে সাথে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১৫ সালে উপজেলা কৃষি অফিস এসসিডিপি এর হপারপোকা দমনের প্রদর্শনী   

 

বাস্তবায়ন করেন এবং আম পাকার একমাস আগে থেকে কোন প্রকার বিষাক্ত ক্যমিকেল প্রয়োগ না করার বিষয়ে গাইডলাইন  প্রদান করেন। ফলে ২০১৫ সালে এক একর জমিতে ৩৫০ টি আম গাছ থেকে  প্রায় ৮ লক্ষ টাকার আম উৎপাদন হয়। ২০১৬ সালে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার আম উৎপাদন হয়। পাশাপাশি জাজিরাসহ শরীয়তপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন লোকজন  পোকামুক্ত এবং অত্যন্ত সুমিষ্টি আমের সরবরাহ পেয়ে আগ্রহী হয়ে উঠে। ব্র্যাক থেকে ঋন নেয়ার আগে তাঁর মাসিক আয় ছিল ৫০০০ টাকা এবং এখন এটি বেড়ে ২৫০০০ টাকা হয়েছে। তাঁর ব্যাক্তিগত
আয় শতকরা ৯০% বৃদ্ধি পেয়েছে।










বানিজ্যিকভাবে আম উৎপাদন শুরু করার পর তাঁর মোট আয় উল্লেখযোগ্য পরিমানে বেড়ছে। আয় বাড়ার সাথে সাথে মোঃ মোশারফ হোসেন মোল্লার তাঁর জীবিকা পরিস্থিতির উন্নতি করার চেষ্টা করছেন এবং তাঁর সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে।। তিনি  ইতিমধ্যে এসডিএস নামক  এনজিও  থেকে নেওয়া ২৫০০০ টাকা ঋন ফেরত দিয়েছেন। তাঁর পরিবারের খাবার গ্রহণে উল্লেখযোগ্য উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে। পাশাপাশি এ অল্প সময়ের মাঝেও এসএফজি এর কার্যক্রমে অংশগ্রহন ও এর সহায়তাসমূহের যথাযথ ব্যবহারের কারনে আয় বাড়ার সাথে সাথে তাঁর সামাজিক স্বীকৃতি ও মর্যাদা বেড়েছে। পাশাপাশি তাঁর এই সফলতায় জাজিরা উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে আ¤্রপালি জাতের আম বাগান স্থাপনে কৃষক উদ্বদ্ধ হচ্ছেন।
  রাজশাহী, চাপাই নবাবগঞ্জসহ উত্তরাঞ্চল আম চাষের জন্য খুবই উপর্যুক্ত জায়গা । তার কারণ মূলত সেখানের আবহাওয়া কিন্তু বাংলাদেশের দক্ষিনাঞ্চল বা মধ্য অঞ্চলের আম চাষের প্রধান সমস্যা হলো উচ্চ আদ্রতা ও প্রতিকুল তাপমাত্রা। এই উচ্চ আদ্রতায় যে রোগ ও পোকার আক্রমন বেশি হয় তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো আমের হপার পোকা। সুতরাং বছরের অক্টোবর মাস থেকে রুটিন স্প্রে এর মাধ্যমে আমের উৎপাদন বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের তুলনায় অন্য স্থানে কোন অংশই কম হয় না। তাই মোঃ মোশারফ হোসেন মোল্লার সফলতায় জাজিরা উপজেলার অন্যান্য কৃষক উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রচুর আমের বাগান স্থাপন করেন যা জাজিরার চাহিদা নিরোসন করে রপাÍানী করা সম্ভবপর।